সারাবিশ্বডটকম অনলাইন ডেস্ক: BIU ল’ অ্যালামনাই রিসিপশন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্পিকার ও মন্ত্রী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
ইওট বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার আইন বিভাগের প্রাক্তন কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদানের এই অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সুপ্রিম কোর্টের এপিলেট ডিভিশনের সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বক্তব্য রাখেন। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল আবদুল জব্বার ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইওট বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের মাননীয় চেয়ারম্যান প্রফেসর কামালুদ্দীন আবদুল্লাহ জাফরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, সকলে পেশাগত জীবনে শুধুমাত্র অর্থের পেছনে নয়, যদি নিষ্ঠার সাথে চরিত্রবান হয়ে নিজেকে দেশের সেবক মনে করে কাজ করতে পারেন তাহলে সম্মান এবং ঐশ্বর্য দু’টোই অর্জন করতে পারবেন। ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে মুসলিম প্রধান এই বাংলাদেশে ইসলামী আইন কানুন শেখার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা খুবই বাঞ্চনীয়, সেক্ষেত্রে আপনারা অবশ্যই ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে এমন একটি সুন্দর আয়োজন করার জন্য তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুর রাজ্জাক এর সঞ্চালনায় এবং BIU আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রসুল এর সার্বিক তত্বাবধানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের ভাইস-চেয়ারম্যান ট্রাস্টি বোর্ড এবং ডিন কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ অধ্যাপক ড. আ.ন.ম রফিকুর রহমান মাদানী, ভাইস-চেয়ারম্যান ট্রাস্টি বোর্ড এবং পরিচালক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সৈয়দ শহীদুল বারী, রেজিস্ট্রার ড. সোহেল আল-বেরুনী, বাংলাদেশের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিকুজ্জামান নজরুল, সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টি মো. মিজানুর রহমান, জারির জাফরী, ড. আব্দুল মান্নান সহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আগত সম্মানীত অ্যালামনাই কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
আলোচকবৃন্দের কথায় উঠে আসে BIU বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এটি রাজধানী ঢাকার মুগদা থানার অন্তর্গত ‘গ্রিন মডেল টাউন’-এ প্রতিষ্ঠিত একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে চারটি বিভাগ রয়েছে। ২০০৬ সালে কামালুদ্দীন জাফরীর অনুরোধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এটি চালু করেন। সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে তিনটি অনুষদের অধীনে মোট চারটি বিভাগ চালু আছে। এগুলো হলো: আইন অনুষদ আইন বিভাগ, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ইসলাম শিক্ষা বিভাগ ও ইংরেজি বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ।
ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আজকে BIU ল’ অ্যালামনাই রিসিপশন অনুষ্ঠানে এসে জানতে পেরেছি, জাতিকে নেতৃত্ব দিতে জনসাধারণের সেবা করতে এবং দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখে চলেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ করেন, যাদের অসীম সাহসিকতায় একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল। একই সঙ্গে ফ্যাসিবাদ মুক্ত হতে জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি এসব শহীদ যাদের অসীম আত্মত্যাগে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছে বলেন।
বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, আপনারা যে যত বেশি আত্মবিশ্বাসী হবেন এবং নিজেকে যে যত বেশি বিদ্যা চর্চার মধ্যে রাখতে পারবেন সে তত বেশি এই পেশাতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন। আমি বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ, সুদক্ষ পরিচালনা পর্ষদ, কাঠামোগত উন্নয়ন ও এখানকার গ্রাজুয়েটদের কোয়ালিটি দেখে অভিভূত। মনে রাখবেন আপনার দ্বারা কেউ যাতে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আইনজীবীরা কণ্ঠহীনদের প্রতিনিধিত্ব করেন। ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠায় অসীম ভূমিকা রাখেন আইনজীবীরা। তিনি বলেন, আইনজীবীরা বিচার বিভাগ ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেন।
অ্যালামনাই অ্যাডভোকেটদের সম্মানে দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজের পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে “BIU ল’ অ্যালামনাই রিসিপশন ২০২৪” অনুষ্ঠানের শেষ হয়।