সারাবিশ্বডটকম অনলাইন নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জে এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষকের অশালীন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকায় সাধারণের মাঝে উত্তেজনা চলছে। শিক্ষকের এমন কথোপকথনে উদ্বেগ জানিয়েছেন অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের এমন মনোভাবে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাজী লাল মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহীনুল ইসলামের ফোনালাপ ভাইরাল হয়। ফোনালাপকালে ওই শিক্ষক ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ নানা ইঙ্গিত দেয়। শিক্ষকের এমন কথোপকথনে ছাত্রী এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার অশালীন কথার মাধ্যমে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের শব্দ চয়ন ও গলা শুনে ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডটি সহকারী শিক্ষক শাহীনুল ইসলামের বলছেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহীন স্যারের এক অডিও আমরা পেয়েছি। এই রেকর্ডে আমরা কয়েকটা ডায়ালগ শুনেছি যা উনি ক্লাসে বলতেন। যেমন, কনগ্র্যাচুলেশন, ভেরি ভেরি ইম্পর্ট্যান্ট। এই কথাগুলো তিনি ক্লাসে বেশি উচ্চারণ করতেন। অডিওর সঙ্গে তার কথার মিল রয়েছে। আমরা নিশ্চিত অডিওর ব্যক্তিটি শাহীন স্যার।
এমন কর্মকাণ্ডে শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি করেছেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা। এ নিয়ে বুধবার অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে দাবি করেছেন, স্বেচ্ছায় সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহীনুল ইসলামকে পদত্যাগ করতে হবে। না হলে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিবেন তারা।
এক শিক্ষার্থী বলেন, এরকম হলে গার্ডিয়ানরা আমাদের স্কুলে পাঠাতে চাইবে না। স্যারের কাছে এটা আশা করিনি। আমরা এটা সহ্য করতে পারছিনা। উনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষক হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর। তাদের ভরসায় ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠান তারা। সেই শিক্ষক যদি নিপীড়ক হন তাহলে নির্ভরতার জায়গায় ফাটল ধরে। এতে শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা সুনামগঞ্জ জেলায় অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে সন্তানদের পাঠাতে অনুৎসাহিত হবে।
একজন অভিভাবক বলেন, এই শিক্ষক টাকার প্রলোভন দিয়েছেন তাকে। বলেছেন তিনি যতদিন আছেন ওই ছাত্রীর কোন টাকা দেয়া লাগবেনা। তার ব্যক্তিগত খরচের টাকাও সে দিবে। এবিষয়ে কাউকে বলতে নিষেধও করে। তুমি আমাকে আদর দাও, তোমার শরীর আমার ভালো লাগে। একজন শিক্ষক হয়ে কিভাবে এসব কথা বলে? স্কুলের স্বার্থ রক্ষা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে উনাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে। নাহলে আমরা লাগাতার আন্দোলনের মাধ্যমে উনাকে পদত্যাগে বাধ্য করবো।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে কোন আবেদন জমা পড়েনি। তাহলে কোন মেয়েটা দুর্ভোগের শিকার হয়েছে তা খুঁজে বের করতে পারতাম। এজন্য আমরা সমস্যায় আছি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ দিনের ভেতর প্রতিবেদন জমা দেবে তারা। দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছাত্র শিক্ষকের শ্রদ্ধার এই সম্পর্কটি ঠিকে থাকবে, এজন্য বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে এমনটি প্রত্যাশা সচেতন মহলের।