সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু, যাত্রীদের দুর্ভোগ

ছবি: সংগৃহিত।

সারাবিশ্বডটকম নিউজ ডেস্ক: সিলেটে তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী ও কর্মস্থলগামী লোকজন। 
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সিলেট শহরে বাস-ট্রাক-মাইক্রোবাসসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল ছয়টায় শুরু হওয়া ধর্মঘটে নগরের সড়কগুলো ফাঁকা দেখা গেছে। মাঝেমধ্যে দু–একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া চলাচল করছে মোটরসাইকেল ও রিকশা।
এর আগে সিলেট কোর্ট পয়েন্টে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এর ধারাবাহিকতায় তিন দফা দাবিতে আজ সকাল থেকে এই ধর্মঘট পালন করছে পরিষদটি। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে—সিলেটের সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোয় গ্যাসের সংকট দূর করা, রাজনৈতিক বিভিন্ন মামলায় আটক শ্রমিকদের মুক্তি ও ২০২১ সালে চৌহাট্টায় শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা মামলা প্রত্যাহার।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি বহাল রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে প্রতি মাসের ১৮-২০ তারিখের পর থেকেই ‘লিমিট’ শেষ হয়ে যায় সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোর। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সিএনজিচালিত গাড়ির চালকরা। এ ছাড়া সড়কের যানবাহন কম চলাচল করায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী সাধারণরাও।
শ্রমিক ইউনিয়নের এ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সিলেটে বর্তমানে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে, প্রতিদিন বিভিন্ন সিএনজি পাম্পে গ্যাস নেওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গ্যাস পাচ্ছেন না পরিবহন শ্রমিকরা। গত কয়েক বছরে গ্যাস সংকট সমাধানের লক্ষ্যে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় মন্ত্রী ও এমপিদের কাছে বার বার ধর্না দিয়েও সমাধান মিলছে না। বেশ কয়েকবার আন্দোলনও করা হয়েছে। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই এবার ‘কঠোর’ আন্দোলনে যেতে হয়েছে।
আজ সকালে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। নগরের দক্ষিণ সুরমার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যাত্রীবাহী বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা। অনেক যাত্রী বাস টার্মিনাল এলাকায় যাওয়ার পর গন্তব্যে না যেতে পেরে ফিরে যান। আবার অনেকেই হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মোটরসাইকেলে গন্তব্যে ছোটেন কেউ কেউ।
হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় গাড়ির জন্য দাঁড়িয়েছিলেন রাকিব আহমদ। তিনি বলেন, আজ সকালে তিনি শ্রীমঙ্গল যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। সকাল আটটার দিকে বের হয়ে সড়কে তেমন যানবাহন পাননি। সে সময়ও জানতেন না ধর্মঘট চলছে। পরে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে জানতে পারেন ধর্মঘট চলছে।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, আজ সকাল থেকে সিলেটের কোনো যাত্রীবাহী যানবাহন ছেড়ে যায়নি। পরিবহন শ্রমিকেরা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি পালন করছেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে ধর্মঘটের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।