‘মুরগির দাম না কমালে সীমান্ত খুলে দেওয়ার সুপারিশ করবো’

সংগৃহিত ছবি।

সারাবিশ্বডটকম নিউজ ডেস্ক: যৌক্তিক দামের চেয়ে বেশি দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করলে এবং তা অব্যাহত থাকলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সীমান্ত খুলে দিয়ে মুরগি আমদানির সুপারিশ করার কথা জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকালে কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনে পোলট্রি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান।

বৈঠকে পাইকারি, খুচরা ব্যবসায়ীরা এবং উৎপাদনকারীরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া কাজী ফার্মস, আফতাব বহুমুখী ফার্মস, প্যারাগন পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেড এবং সিপি বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় রমজান মাসে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকার মধ্যে বিক্রি করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন উৎপাদনকারীরা।

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়ে শফিকুজ্জামান বলেন, ‘অন্তত রমজান মাসে আপনারা একটি অবস্থায় আসেন। আপনারা একটু কম লাভ করেন। আজ উৎপাদনকারীরা দাম নিয়ে একটা ঘোষণা দিয়েছেন। এরপর আমরা পাইকারি ও খুচরা বাজার ঠিক করবো। যদি কোনও সমাধান না আসে, আমরা আমদানির জন্য সুপারিশ করবো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা এত দিন হস্তক্ষেপ করিনি। জাতির কাছে পরিষ্কার হওয়া উচিত যে এই মুরগি বাবদ অতিরিক্ত ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি নিচ্ছে ঢাকার বাজারে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। আমরা চাই পোলট্রি শিল্প আরও বিকশিত হোক, সরকার বারবার হস্তক্ষেপ করলে এই শিল্প খারাপের দিকে যেতে পারে। আপনারা ইন্ডাস্ট্রি চালান আমরা সাপোর্ট দেবো। কিন্তু অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলে আমরা সহায়তা করতে পারবো না।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘৯ মার্চের বৈঠকের পর দেখা গেল বাজারের ব্রয়লার মুরগির দাম আবার বেড়ে গেল। গতকাল (বুধবার) বাজারে দেখলাম কোথাও ২৭০ আবার কোথাও ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফিড আমদানি ও খরচসহ সব তথ্য যাচাই করে আমি বলেছি ২০০ টাকার বেশি দাম হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিউমার্কেটের যে বিক্রেতা ২৭০ টাকায় বিক্রি করছেন, তিনি কাপ্তান বাজার থেকে কিনছেন ২৪৯ টাকা দরে। আমরা কাপ্তান বাজারে গিয়ে ওই বিক্রেতাকে ধরলাম এবং ভোরে সেখানে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা গিয়ে দেখল যে কত টাকায় মুরগি সেখানে আসে। সারা দেশ থেকে তথ্য নিয়ে জানলাম যে খামার থেকে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২২০-২৩০ টাকায় কিনছে। সেটি হাতবদল হয়ে খুচরা পর্যায়ে এসে কোথাও ২৬০ আবার কোথাও ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

এসএমএসের মাধ্যমে মুরগি নিলাম হয় জানিয়ে ভোক্তা অধিদফতরের প্রধান বলেন, ‘ঢাকার বাইরের সঙ্গে ঢাকার বাজারের মূল্য ৩০ টাকা ব্যবধান। মুরগি নিয়ে যা চলছে, প্রত্যেক ভোক্তা হয়রানি হচ্ছেন। টাস্কফোর্সের বৈঠকে আমি বলেছিলাম এ বিষয়ে, সেখানে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাও ছিলেন। তারাও বলছেন মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। ৯ মার্চের বৈঠকের পর ফিডের দাম আরও বেড়ে গেছে। বৈঠকে উৎপাদনকারীরা বলেছেন যে ফিডের দাম বাড়ার কারণে এই বৃদ্ধি হয়েছে। আজকের বৈঠকে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা ছিলেন। তাদের কাছে সব তথ্য আছে, কীভাবে এসএমএসের মাধ্যমে মুরগি নিলাম হচ্ছে।’

কাজী ফার্মসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, ‘আমরা পোলট্রি ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমাদের ফার্ম থেকে সরাসরি মুরগি বিক্রি করবো। ফার্ম থেকে মুরগি যাওয়ার পর কয়েক হাতবদল হয়, দাম বেড়ে যায়। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে উৎপাদন বাড়াবো, তাতে দাম একটু কমবে বাজারে। এই রমজান মাসে আমরা ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করবো।’