বরিশালে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক: বরিশালের মুলাদী উপজেলার চর মহেষপুর গ্রামে নিখোঁজের ১৩ দিন পর গিয়াস উদ্দিন সরদার (৩০) নামে এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে ক্ষতবিক্ষত লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। গিয়াসকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে নিহতের পরিবার।

নিহত গিয়াস ওই এলাকার লালমিয়া সরদারের ছেলে। তিন বছর পূর্বে কোরিয়া থেকে ফিরে মুলাদীর সেলিমপুরে মার্বেলাস মাল্টিপারপাস কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান গিয়াসের শ্বশুর কাওসার হামিদ। তার বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনিতে। সম্প্রতি ওই চাকরি ছেড়ে গিয়াস ঢাকায় চাকরি নেয়।

গিয়াসের মামা মো. মহিসন বলেন, গিয়াস আবারো কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিলে সম্প্রতি ভিসা আসে। তার দুটি সন্তান রয়েছে। স্ত্রীসহ সন্তানদের গ্রামের বাড়ি রেখে যেতে এবং স্বজনদের বলতে ২৫ ডিসেম্বর সকালে গ্রামের বাড়িতে আসেন তিনি। গ্রামের বাড়িতে এসে স্বজনদের সাথে কোরিয়া যাওয়ার বিষয় নিয়ে পারিবারিক বৈঠকও হয় তার। ওইদিন সন্ধ্যায় সেলিমপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে ১০/১২ জন গিয়াসকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে গিয়াস নিখোঁজ ছিল।

এ ঘটনায় গিয়াসের স্ত্রী বাদী হয়ে মুলাদী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। নিখোঁজের ১৩ দিন পর স্থানীয়রা তালুকদার বাড়ির পিছনের চরে গিয়াসের লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। এরপর পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে গিয়াসকে সনাক্ত করে। লাশটি ছিল ক্ষতবিক্ষত। গিয়াসকে হত্যার পর লাশটি ওই চরে ফেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

মহসিন আরও বলেন, মাল্টিপারপাস ছিল গিয়াসের শ্বশুরের। মাল্টিপারপাস ব্যবসার জন্য টাকা নিয়েছে কাওসার হামিদ। কিন্তু দোষ চাপানো হয় গিয়াসের উপর। এ কারণে গিয়াস চাকরি ছেড়ে ঢাকায় চাকরি নেন। কিন্তু যে টাকা আয় করতো তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে যেত। এ কারণে আবার কোরিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক টাকা জমা দিলে তার ভিসা আসে। ভিসা আসায় এ মাসের মধ্যে তার কোরিয়া যাওয়ার কথা ছিল।

ওই গ্রামের একটি সূত্র জানায়, মাল্টিপারপাসে চাকরির সুবাদে গিয়াসকে অনেকে নগদ টাকা দিয়েছে। কিন্তু সেই টাকার লাভ তো দূরের কথা যে টাকা নিয়েছে তাও ফেরত দেয়নি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গিয়াস ও তার শ্বশুর কাওসারের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয় গ্রামবাসীর। এ কারণে গিয়াস ওই চাকরি ছেড়ে ঢাকায় আত্মগোপন করে। তার আসার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে পাওনাদাররা তাকে টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেয়। টাকা দেয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয় বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।