প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়নে সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

সারাবিশ্বডটকম অনলাইন ডেস্ক: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, করোনা মহামারির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও কৌশলী নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার অর্থনীতিকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে। এই সময়ে প্রতিবেশি ভারতসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি যখন নেতিবাচক, সেখানে বাংলাদেশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। 
তিনি বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্যে হলো দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়া বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমানের উন্নয়ন করা। সেলক্ষ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। 

সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নীত হওয়া উপলক্ষ্যে এক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সংলাপে তিনটি পৃথক অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। প্রথম ভাগের অধিবেশন ছিল ‘এলডিসি থেকে মসৃন এবং টেকসই উত্তরণের প্রস্তুতি’, দ্বিতীয় ভাগে ছিল ‘এলডিসি থেকে উত্তরণ এবং কার্যকর উন্নয়ন সহযোগিতা’ এবং সর্বশেষ তৃতীয় অধিবেশন ছিল ‘এলডিসি থেকে উত্তরণ: বাণিজ্যের সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জসমূহ’।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমবন, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান ও শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান,  ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট প্রতিনিধি ভ্যান গুয়েন, বাংলাদেশ উইম্যান চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও জাতীয় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, গবেষণা সংস্থা র‌্যাপিড-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)- এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সিজিএস চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী এবং স্বাগত বক্তব্য দেন সিজিএস নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। 
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কোভিডের মধ্যে আমরা জীবন-জীবিকার মেলবন্ধন করে কৃষি, শিল্পসহ অন্যান্যখাতে উৎপাদন সচল রেখেছিলাম। লকডাউন এমনভাবে দেওয়া হয়, যাতে উৎপাদনের উপর প্রভাব না পড়ে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে কোভিড অতিমারির শুরুতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে পোশাক কর্মীদের বেতন পরিশোধে তেমন কোন সমস্যা তৈরি হয়নি এবং উৎপাদনও সচল ছিল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য হলো, সামগ্রিকভাবে দেশে পরিপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এর জন্য ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কৃষি সামগ্রীতে প্রচুর ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। একইসাথে অবকাঠামো উন্নয়নে বড় বড় মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমবন বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে শিক্ষা,স্বাস্থ্য, রাজস্ব কাঠামো, রপ্তানি নীতি-কৌশলসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কার্যকর সংস্কার গ্রহণ জরুরি। তিনি এর জন্য রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যবসায় সুবিধাদি বাড়ানো, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের শুল্ক হার হ্রাস এবং শিল্পায়নের জন্য বেসরকারিখাতকে উদ্যোগি ভুমিকা পালনের সুপারিশ করেন।
সংলাপে বক্তারা এলডিসি থেকে মসৃণ এবং টেকসই উত্তরণের জন্য সরকারকে দেশের সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে একটি কার্যকর কর্মপরিকল্পনা তৈরির পরামর্শ দেন।