সারাবিশ্বডটকম রিপোর্ট: রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে যাত্রী-যানবাহনের চাপ কমেছে। সাধারণত এই নৌপথে ফেরি পারের জন্য দীর্ঘ সারিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন অপেক্ষা করে। কিন্তু রবিবার (২৬ জুন) দেখা গেছে উল্টো চিত্র।
সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট ও মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ঘাট এলাকায় ঘরমুখো মানুষের ভিড় নেই। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছে ফেরিগুলো। মহাসড়কে মাঝে মাঝে স্থানীর কিছু পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন খুব একটা দেখা যায়নি। পণ্যবাহী ট্রাকও ছিল কম। ঘাটে কোনও যানবাহনের সারি না থাকায় সরাসরি ফেরিতে উঠে পদ্মা পার হচ্ছে যানবাহন। পুরো ফেরিঘাট ও মহাসড়ক এলাকায় কোনও যানজট নেই।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৫ নম্বর ঘাট পন্টুন এলাকায় কথা হয় রিপন মিয়া নামে এক যুবকের সঙ্গে। তিনি কুষ্টিয়া থেকে আসা ঢাকাগামী একটি বাসের চালক।
রিপন মিয়া বলেন, ‘শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। এ কারণে ঘাটে ও মহাসড়কে আজ যানবাহন ও যাত্রীদের কোনও চাপ নেই। পদ্মা সেতু চালুর আগ পর্যন্ত ফেরিঘাট ও মহাসড়কে ভোগান্তি পোহাতে হতো। আজ কোনও ঝামেলা ছাড়াই ঘাটে পৌঁছে। ঘাট ও মহাসড়ক পুরোটাই ফাঁকা।’
৬ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনে কুমারখালী থেকে আসা ট্রাকচালক মানিক মিয়া বলেন, ‘আমি সকালে ধান বোঝাই করে ঘাটে এসে সরাসরি ফেরিতে উঠতে পেরেছি। আমি জানতাম পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া ঘাট ফাঁকা হয়ে যাবে। ট্রাকের সিরিয়ালে আর দিনের পর দিন থাকতে হবে না। এজন্য আমরা অধিকাংশ সময়ই নদী পারাপারে দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহার করবো।’
ঢাকা উত্তরা থেকে আসা ফরিদপুরের মধুখালীগামী যাত্রী শোয়েব হাসান বলেন, ‘ভেবেছিলাম সকালে পদ্মা সেতু হয়ে বাড়ি যাবো। কিন্তু আবার ভাবলাম, অনেক ঘোরা হবে। এ জন্য দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে বাড়ি যাচ্ছি। বাসে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত এসে লঞ্চে নদী পার হয়েছি। কোনও ঝামেলা হয়নি, সড়কও একদম ফাঁকা ছিল।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিন জানান, পদ্মা সেতু চালুর আগের দিন পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট ও মহাসড়কে যানবাহনের চাপ ছিল। তবে আজ সকাল থেকে সেই চাপ একেবারে নেই। যেসব গাড়ি এখন ফেরিঘাট এলাকায় আসছে, তা সরাসরি নৌপথ পারাপারের সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২১টির মধ্যে ১৯টি ছোট-বড় ফেরি যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে। ঘাটে যানবাহন কম থাকায় দুটি ডাম্প (টানা) ফেরি বসিয়ে রাখা হয়েছে। অধিকাংশ চলমান ফেরিগুলো ঘাটে যানবাহনের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ছেড়ে যাচ্ছে।