সারাবিশ্বডটকম অনলাইন ডেস্ক: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রা অনেকের পছন্দ নয়। সেজন্য নানা ছলছুতায় প্রথমে আনে মানবাধিকার, তারপর বলে সুষ্ঠু পথে নির্বাচন হয়নি’।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে অবশ্যই আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং জনগণের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে। সরকার সর্বোচ্চভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে। দয়া করে কেউ আমাদের গণতন্ত্র শিক্ষা দেবেন না’।আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘মায়ের কান্না’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে পরাজিত প্রার্থীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরাজয় মেনে নেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও পরাজয় মেনে নেননি। যারা গণতন্ত্র শিক্ষা দিতে চায়, তাদের অনেকের দেশেই গণতন্ত্র নেই।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে দেশের মানুষকে সংঘবদ্ধ করে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করে এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন’।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কিছু কিছু সংগঠন আছে, যারা মানবাধিকার নিয়ে ব্যবসা করে। তারা কাউকে কিল মারলে বিবৃতি দেয়, কাউকে ঘুষি মারলেও বিবৃতি দেয়। কিন্তু তাদের আত্মীয়-স্বজন কাউকে মেরে ফেললে কোনো বিবৃতি নেই’।
তিনি বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১২-১৪ সালে কীভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, নিরীহ মানুষ যারা রাজনীতি বোঝে না, রাজনীতি করে না, রাজনীতির অঙ্গনে হাটে না, তাদের কীভাবে পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। দরজায় তালা দিয়ে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গাড়িও পুড়ে গেছে, আর ড্রাইভারের দেহ পুড়ে অঙ্গার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০১২-১৪ সালে এই দেশে নির্মমতা হয়েছে, মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক দাবি আদায়ের জন্য পৃথিবীর কোথাও এইভাবে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়নি।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিএনপির প্রধান সঙ্গী। তারা ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক দল আখ্যা দিয়ে বৈঠক করেছে।
তিনি বলেন, যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন, গত কয়েক বছর ধরে এই মায়ের কান্নার ব্যানারে যারা কেঁদে বেড়াচ্ছেন সমগ্র দেশজুড়ে, আপনাদের কর্ণ প্রহরে মায়ের কান্না কেন পৌঁছে না। আপনাদের কাছে বলা হয়েছিল, তারা দেখা করতে চান। কিন্তু আপনারা এখনো পর্যন্ত দেখা করেননি। মানবাধিকার এখন কিছু কিছু রাষ্ট্রে অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবাধিকার নিয়ে ব্যবসা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি কয়দিন যাবত বলছে, খালেদা জিয়ার অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার যতবার হাসপাতালে গেছেন, ততবারই বলা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। বিদেশে না নিলে তিনি মারা যাবেন। কতবার তিনি হাসপাতাল থেকে ভালো হয়ে বাড়িতে ফেরত গেছেন।
তিনি বলেন, দেশে খালেদা জিয়ার যেন সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত হয় সেজন্য সরকার যা কিছু করার তা করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু বেগম দিয়া স্বাস্থ্য নিয়ে আপনার রাজনীতি করবেন, সেটা তো করতে দেওয়া যায় না। বিএনপি বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতির দাবার গুটি বানিয়েছে।
মায়ের কান্না সংগঠনের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান মিয়া লেলিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।