টিএসসির কাওয়ালি গানের আসরে হামলার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

সারাবিশ্বডটকম নিউজ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পায়রা চত্ত্বরে কাওয়ালি গানের আসরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের কর্মীরা অনুষ্ঠান শুরুর আগেই মঞ্চে হামলা, চেয়ার ভাঙচুর ও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আয়োজক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় টিএসসির পায়রা চত্ত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার ভিডিও ধারণ করতে গেলে ছাত্রলীগের কর্মীরা সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের বাধা দেন। তারা কয়েকজনের মোবাইল ফোন নিয়ে ভিডিও মুছে ফেলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টায় কনসার্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল। কনসার্ট শুরুর আগেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে এসে কনসার্টের ব্যানার ছিড়ে ফেলে। ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন সবাইকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। তবুও আয়োজকরা কনসার্ট শুরুর জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা মঞ্চে ভাঙচুর করেন।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরেক প্রত্যক্ষদর্শী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রস্তুতি পর্বের এক পর্যায়ে মঞ্চের পেছনে যেখানে চায়ের দোকানগুলো আছে সেখানে “আগুন আগুন” চিৎকার শুনতে পাই। এর পরেই ছাত্রলীগের কর্মীরা মঞ্চে ভাঙচুর শুরু করেন।’

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক নাজির আহমেদ, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাব্বির হোসাইন শোভন, জহুরুল হক ছাত্রলীগের সক্রিয়কর্মী ফরিদ জামানসহ আরও অনেক ছাত্রলীগ কর্মী আজকের অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন৷’

অনুষ্ঠানটির আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মীর হুযাইফা আল-মামদূহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে কাওয়ালি গানের আসরের আয়োজন করি। এ জন্য আমরা আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু আজ সকালে প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে অনুষ্ঠানটি না করার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আগ্রহ ও অনুষ্ঠানের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হওয়ায় আমরা অনুষ্ঠানটি করার সিদ্ধান্ত নেই।’

হামলা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কাওয়ালি গান শুনতে আজ কয়েকশ শিক্ষার্থী আগ্রহ নিয়ে টিএসসিতে আসেন। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই টিএসসিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। তারা অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদেরকে চাপ দিতে থাকেন। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা এসে মঞ্চে হামলা চালায়। তারা চেয়ার ভাঙচুর ও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত না। যারা ছাত্রলীগকে অভিযুক্ত করছে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠান না করার জন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তারা কেন সেটি করেছে সেটি খতিয়ে দেখা হবে। আর হামলার বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখবো।’

এই হামলার প্রতিবাদে বামসংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলার ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসের ভেতরে একটি প্রতিবাদ মিছিল করেছেন৷