অনলাইন ডেস্ক: আরও চারটি ভিন গ্রহের সন্ধান পাওয়ার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা; বলছেন ভিন গ্রহে পানি থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে! নতুন করে যে চারটি গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছ তার একটি আকারে পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুণ এবং আমাদের নেপচুন গ্রহের অর্ধেক। বাকিগুলোও অনেকটাই পৃথিবীর মতো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসার টেস উপগ্রহের চোখে আলাদা ভাবে ধরা পড়েছে বাকি তিনটি ভিন গ্রহ। আমাদের খুব কাছেই রয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, তবে সবকয়টি ভিন গ্রহই রয়েছে তাদের নক্ষত্র থেকে এমন একটি দূরত্বে, যাকে বলে হ্যাবিটেব্ল জোন বা বাসযোগ্য এলাকা। যেখানে পানির তরল অবস্থায় থাকার সম্ভাবনা থাকে যথেষ্টই। গ্রহটির পাথুরে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ বার ওই ভিন গ্রহগুলিতে যদি বায়ুমণ্ডলের অস্তিত্বেরও প্রমাণ মেলে, তা হলে সেই মুলুকে প্রাণের হদিশ পাওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরালো হবে।
সিয়াট্লে আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ২৩৩তম বৈঠকে সোমবার একটি ভিন গ্রহের আবিষ্কারের ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়েছে, নাসার কেপলার টেলিস্কোপের পাঠানো তথ্যাদিই ওই ভিন গ্রহটির খোঁজখবর দিয়েছে।
ভিন গ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে, কে-২-২৮৮বিবি। রয়েছে আমাদের থেকে ২২৬ আলোকবর্ষ দূরে। টরাস নক্ষত্রপুঞ্জে। আমাদের সূর্যের চেয়ে আকারে অনেক ছোট, অনেক হাল্কা আর প্রায় টিমটিম করে জ্বলা একটি তারাকে এক বার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে ভিন গ্রহটি সময় লাগে ৩১.৩ পার্থিব দিন। মানে, আমাদের ৩১ দিনের মাস পেরনোর পর আরও ৩টি ঘণ্টা। পরে নাসার সায়েন্স মিশন ডাইরেক্টরেটের অ্যাসোসিয়েট অ্য়াডমিনিস্ট্রেটর থমাস জুরবুচেন তার টুইটেও ওই আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন।
গবেষকদলের নেতৃত্বে রয়েছেন যিনি, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই স্নাতক স্তরের ছাত্রী আদিনা ফিনস্টিন জানিয়েছেন, ওই ভিন গ্রহটি যে তারামণ্ডলে রয়েছে তার নাম কে-২-২৮৮। সেখানে দুইটি তারা একে অন্যকে প্রদক্ষিণ করছে। কোনও তারামণ্ডলের এই অবস্থাকে বলে বাইনারি সিস্টেম। সেখানকার দুইটি তারাই আমাদের সূর্যের চেয়ে আকারে অনেকটা ছোট। তাদের তেজও খুব কম। সূর্যের তুলনায় বলা ভালো, তারা টিমটিম করে জ্বলছে। তবে এই ভিন গ্রহটির বিশেষত্ব এটাই যে, তা তুলনায় আরও ছোট আর বেশি টিমটিম করে জ্বলা তারাটিকেই প্রদক্ষিণ করছে। ওই নক্ষত্রমণ্ডলের দুটি তারা একে অন্যের চেয়ে রয়েছে ৫১০ কোটি মাইল দূরে। যার মানে, আমাদের সূর্য থেকে বলয় গ্রহ শনি যতটা দূরে রয়েছে, ওই নক্ষত্রমণ্ডলের দু’টি তারা একে অন্যের চেয়ে রয়েছে তার ৬ গুণেরও বেশি দূরত্বে।
গবেষণাপত্রটি শিগগিরই বের হতে চলেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল-এ। গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, ওই তারামণ্ডলের দুইটি নক্ষত্রের মধ্যে যেটি বেশি ঝকঝকে, আলো ঠিকরোচ্ছে বেশি, তার ভর আমাদের সূর্যের ভরের অর্ধেক। আর যে তারাটি তুলনায় বেশি ‘টিমটিম’ করে জ্বলছে, সেটির ভর আমাদের সূর্যের এক-তৃতীয়াংশ।