করোনায় হারাতে হয়েছে যে চিকিৎসকদের

ডা. মঈন উদ্দিন (ছবি সংগৃহীত)

অনলাইন ডেস্ক: গতবছরের ২৩ মার্চ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন আহমদ ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘সবাই যার যার অংশ পালন করুন। আমরা হাসপাতালে কাজ করছি। আপনি ঘরে থাকুন। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।’ স্ট্যাটাস দেওয়ার এক মাসের মাথায় ওই বছরের ১৫ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ডা. মঈন। দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রথম চিকিৎসক তিনি।

গত দেড় বছরে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৬৯ জন চিকিৎসক মারা গেছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।

বিএমএ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্মরত ছিলেন ২৩ জন, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ৭৫ জন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাতজন, আর্মি মেডিক্যালে কোরে ছিলেন একজন এবং জেনারেল প্র্যাকটিশনার ৬৩ জন।

গত ১৯ জুলাই পর্যন্ত আট হাজার ৬১৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসক তিন হাজার ২৪ জন, নার্স দুই হাজার ১৪২ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তিন হাজার ৪৫২ জন।

ওরা ১৬৯ জন

গতবছরের এপ্রিলে একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হলেও এরপর দিনে দিনে সংখ্যাটা বেড়েছে। বিএমএ’র হিসাব অনুযায়ী, গতবছরের জুনেই মারা গেছেন ৪৫ জন ডাক্তার।

গত ৩ মে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক কর্নেল (অব.) ডা. মো. মনিরুজ্জামান, ১১ মে ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আনিসুর রহমান, ১২ মে ইবনে সিনা হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আবুল মোকারিম মো. মহসিন উদ্দিন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মীর মাহবুব, ১৮ মে ডা. আজিজুর রহমান রাজু ও ডা. সারোয়ার ইবনে আজিজ, ২২ মে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী দিলরুবা খানম ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. এম এ মতিন, ২৫ মে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডা. সৈয়দ জাফর হোসাইন মারা যান।

২৬ মে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. আমিনা খান ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুর রহমান, ২৭ মে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোশাররফ হোসেন, ২৮ মে ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. মো. এ. এফ. এম সাইদুল ইসলাম মারা যান।

চিকিৎসকরা যখন একের পর এক মারা যাচ্ছিলেন তখন ডা. তানজিনা হোসেন ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশে কতজন বিশেষজ্ঞ আছেন এ বিষয়ে কেউ জানেন? কজন শিশুরোগ অধ্যাপক, কজন গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট? মির্জা নাজিমুদ্দিন বা গোলাম কিবরিয়া স্যারের মতো মেন্টর? লাখে কেন, দশ-বিশ পঞ্চাশ লাখেও একজন নেই। আগামী বছরগুলোতে এই ভয়াবহ লস টের পাওয়া যাবে।’

১ জুন কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা যান জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান আকন্দ বাবলু। ২ জুন ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মনজুর রশিদ চৌধুরী, ৩ জুন চট্টগ্রামের মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. এহসানুল করিম, ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন ও ডিজি হেলথের অবসরপ্রাপ্ত ইভালুয়াটার অফিসার ডা. এ কে এম ওয়াহিদুল হক।

৪ জুন মারা যান ফরেনসিক মেডিসিনের কিংবদন্তি চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার ডা. মুহিদুল হাসান ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এন আই খান। ৫ জুন মারা যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এস এ এম গোলাম কিবরিয়া ও বেসরকারি পোশাক কারখানায় কর্মরত ডা. ইহসানুল কবির চৌধুরী।

৬ জুন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান সাভার ইপিজেডের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার (অব.) ডা. আবুল কাসেম খান। ৭ জুন মারা যান বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ও পরিচালক (মেডিক্যাল সার্ভিসেস) অধ্যাপক ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন। ৮ জুন ডা. রাজিয়া, ল্যাবএইড হাসপাতালের অ্যানেস্থেশিওলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. সাখাওয়াত হোসেন ও চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আবু বকর সিদ্দিক। ৯ জুন বরিশালের ডা. আনোয়ার হোসেন ও ইমপালস হাসপাতালের অ্যানেস্থেশিওলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. জলিলুর রহমান খান।

১০ জুন মারা যান মেরি স্টোপস ক্লিনিকের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. তানজিলা রহমান। ১২ জুন মারা যান চার জন চিকিৎসক। তাদের মধ্যে রয়েছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. গাজী জহিরুল হাসান, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ মানোয়ার, যিনি কোভিড প্রাদুর্ভাবের পর ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘একজনের মৃত্যু একটি ট্রাজেডি। যখন মৃত্যু লাখ ছাড়ায়, তখন তা শুধুই পরিসংখ্যান। চিকিৎসকেরা এই পরিসংখ্যানের অংশ হওয়ার চেষ্টা করো না। নিরাপদে থাকার চেষ্টা করো।’

সেদিনই মারা যান জেড এইচ শিকদার মহিলা মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ কে এম ফজলুল হক ও চট্টগ্রামে বেসরকারিভাবে কর্মরত ডা. আরিফ হাসান। ১৩ জুন বেসরকারি বিআরবি হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসাইন। পরদিন ১৪ জুন চট্টগ্রামের ডা. সাদেকুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. নজরুল ইসলাম। ১৫ জুন বিসিআইসির সাবেক অতিরিক্ত প্রধান মেডিক্যাল অফিস ডা. তৌফিকুন্নেছা ও কক্সবাজার জেলার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. আনম আব্দুল হাই এবং ১৬ জুন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডা. এ. কে. এম মুজিবুর রহমান।

১৭ জুন একইদিনে মারা যান চার চিকিৎসক। তারা হলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের সিনিয়র আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. নুরুল হক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফুজ্জামান, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. শাহ আব্দুল আহাদ ও এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. রফিকুল হায়দার লিটন।

১৮ জুন চট্টগ্রামের ডা. জান্নাতুন নাঈম জিনিয়া ও ১৯ জুন মারা যান বরিশাল সদর হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এমদাদুল্লাহ খান। ২০ জুন মারা যান তিন চিকিৎসক-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত অধ্যাপক ডা. শফিক আহমেদ, কুমিল্লার সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান রিপন ও ইমপালস হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. বজলুর রহমান।

২১ জুন চট্টগ্রামের নাক-কান গলা বিশেষজ্ঞ ডা. ললিত কুমার দত্ত ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুনীল কুমার সরকার ও ডা. সৈয়দ শাহনেওয়াজ এবং ২৩ জুন মারা যান নারায়ণগঞ্জের ডা. মো. আলী আসগর ও ডা. উপেন্দ্র নাথ পাল।

২৪ জুন মারা যান তিনজন চিকিৎসক-সিরাজগঞ্জের ডা. মো. ইউনুস আলী খান, ডা. মো. সমিরুল ইসলাম বাবু ও ডা. এস এম সাইফুল ইসলাম। ২৫ জুন ডা. ফিরোজা বানু মিনু, ২৬ জুন ডা. মোহাম্মদ হোসেন, ২৭ জুন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. আসাদুজ্জামান ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. গোপাল শংকর দে এবং ২৯ জুন মারা যান ডা. সৈয়দ তমিজুল আহসান রতন।

১ জুলাই মারা যান গাজীপুরের ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রাধন অধ্যাপক ডা. গোলাম সারওয়ার, বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন ও হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ ওয়াহাব।

৪ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফিজিওলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও বিএমএ-র আজীবন সদস্য অধ্যাপক ডা. কে এম মুনতাকিম চৌধুরী, ৫ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম নুরুল আনোয়ার, ৭ জুলাই ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ১৪ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সুলতানা লতিফা জামান আইরিন, ১৭ জুলাই কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম নুর উদ্দিন আবু আল বাকী রুমি, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. আবদুল হামিদ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার ডা. কোহেল করিম, ১৮ জুলাই জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবল হোসাইন খান চৌধুরী, ২৫ জুলাই কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের সাবেক পরিচালক ব্রি. জেনারেল ডা. মো. শহীদুল্লাহ, ২৬ জুলাই অর্থোপেডিক সার্জন ডা. বদিউজ্জামান হীরা, ২৮ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ-এর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. টি আই এম আব্দুল্লাহ আল ফারুক, ২৯ জুলাই মারা যান ডা. নারগিম মুর্শিদা বানু।

৩ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ৬ আগস্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক ডা. এফ বি এম আব্দুল লতিফ, ৮ আগস্ট ডা. মো. গোলাম মোস্তফা, ৯ আগস্ট সিরাজগঞ্জের শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের অর্থোসাজারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রেজোয়ানুল বারী শামীম, ১০ আগস্ট রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাক হোসেন আনসারী, ১১ আগস্ট স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের নাক-কান-গলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল হক খান এবং ১৬ আগস্ট মারা যান ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রহমান।

২০ আগস্ট মারা যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক ডা. সৈয়দ আখতার হোসেন ও জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক সহ-পরিচালক ডা. এ বি এম সিদ্দিকুল ইসলাম। ২৮ আগস্ট বিএমএর আজীবন সদস্য ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও কুমিল্লা জেলার সাবেক সিভিল সার্জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো আব্দুল মতিন পাটোয়ারী মারা যান।

২ সেপ্টেম্বর ডা. বি এম ফারুক, ৩ সেপ্টেম্বর মারা যান ইব্রাহীম মেডিক্যাল কলেজের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামসুন নাহার বেলা, ৭ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ডা. এ এফ এম সিদ্দিকুর রহমান ও অধ্যাপক ডা. মো. হুমায়ুন কবীর। ৮ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ডা. সুরাইয়া রওশন আর বেগম ও জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী। ১৭ সেপ্টেম্বর ডা. মো ওবায়দুর রহমান এবং ২৮ সেপ্টেম্বর মারা যান ডা. হেদায়েতুল ইসলাম।

১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ হোসেন, ১১ অক্টোবর অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম, ১৩ অক্টোবর ডা. কাউসার আহমদ মজুমদার, ১৪ অক্টোবর ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ ও ডা. মো. খলিল উদ্দিন, ২৫ অক্টোবর অধ্যাপক ডা. এ কে এম মাসুদুর রহমান ও ২৯ অক্টোবর মারা যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সেলিম আহমেদ।

৩০ অক্টোবর মারা যান ময়মনসিং মেডিক্যাল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল।

১ নভেম্বর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যাস্ট ( রেডিওলজি ও ইমেজিং) ডা. সৈয়দ সাজ্জাদ কামাল হিরু, ৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জের মুন্নু মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ, ৮ নভেম্বর ঢাকার শাহাবুদ্দিন মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান অধ্যাপক ডা. এ বি এম আলী আকবর বিশ্বাস, ১৪ নভেম্বর ডা. এ বি এম মাকসুদুস সালেহীন, ১৫ নভেম্বর ডা. মো. রেজাউর রহমান প্রধান, ১৮ নভেম্বর ডা. নুরুল ইসলাম, ১৯ নভেম্বর ডা. আ জ ম শফিউল আলম শাহ, ২৯ নভেম্বর ডা. বুশরা সারওয়ার ও ডা. মজিবর রহমান খান হীরা মারা যান।

গত ৩ ডিসেম্বর ঢাকার ইমপালস হাসপাতলের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এ কে এম শামসুল হক, ৬ ডিসেম্বর ডা. আইরিন পারভীন, ৯ ডিসেম্বর ডা. সাইদুল ইসরাম, ১৩ ডিসেম্বর ডা. রাশেদ সারওয়ার আলম রনি ও অধ্যাপক ডা. মো আব্দুল কাদির খান, ১৯ ডিসেম্বর ডা. গাজী শফিকুল আলম চৌধুরী, ২০ ডিসেম্বর অধ্যাপক ডা. আব্দুল মুকিত সরকার, ২১ ডিসেম্বর ডা. মোহাম্মদ হাসান মুরাদ ও ডা. মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, ২৫ ডিসেম্বর ডা. মো. আনোয়ারুল করিম বাবুল, ২৮ ডিসেম্বর ডা. শেখ  সায়েম ও জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম শামসুল হক, ৩০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. লুটফর কাদের লেনিন মারা যান।

এ বছরের ৫ জানুয়ারি মারা যান কর্নেল ( অব.) ডা. আবুল কাশে, ৬ জানুয়ারি ডা. জীবেশ কুমার প্রামাণিক, ৭ জানুয়ারি ডা. মো. আব্দুর রশীদ ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন কনসালট্যাস্ট ডা. মো. আনোয়ার হোসেন, ২৬ জানুয়ারি মারা যান স্কয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. কাজী মো. নাসের আহমেদ।

১২ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান খন্দকার, ৯ মার্চ অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক, ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম সুলতান উল আলম, ২৭ মার্চ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল হান্নান মারা যান।

২ এপ্রিলে অধ্যাপক ডা. নূর-ই-আলম পাটোয়ারী, ৫ এপ্রিলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. বদরুল হক টিটু, ৬ এপ্রিল ডা. নুরুল হাসান শোয়েব, ৮ এপ্রিলে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ, ৯ এপ্রিলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল লতিফ ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন উপ-পরিচালক ডা. গাজী সাইফুল আলম চৌধুরী স্বপন, ১০ এপ্রিল ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্ম মোজাদ্দেদ মেহেদী, ১১ এপ্রিল ডা. শরীফুল আহসান, ১৩ এপ্রিল ডা. উপেন্দ্র নাথ শীল, ১৬ এপ্রিলে ডা. রেজাউল করিম বাদল, ডা. মমিনুল আলম ও ডা. মোহাম্মদ মুজাহিদ হোসেন রতন, ১৭ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. আবু আহমেদ আশরাফ আলী, ২০ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. আব্দুল মজিদ, ২২ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক, ২৪ এপ্রিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান তুষার, ২৫ এপ্রিলে অধ্যাপক ডা. মো. হুমায়ুন কবির মুকুল ও ডা. আশিষ কুমার বণিক, ২৬ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. এ বি এম শামসুল হুদা ও ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম, ২৭ এপ্রিল ডা. ফরিদুল আলম রেজা শোকরানা ও ডা. মো আব্দুল ওহাব তরফদার মারা যান।

৭ মে-তে ডা. মো. মাহমুদুর রহমান নিলু, ২৯ মে ডা. এ এ গোলাম মর্তুজা হারুন, ২১ জুন অধ্যাপক ডা. কে এম সাইফুল ইসলাম ডেভিড, ২৫ জুন ডা. দিনার জেবিন ও ৩০ জুন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান মারা যান। ৫ জুলাই ডা. আলী আশরাফ, ৮ জুলাই ডা. আ ন ম আব্দুর রাজ্জাক, ৯ জুলাই মারা যান ডা. জেসমিন সুলতানা শান্তা, ডা. মাজেদ আলী ও ডা. মুহাম্মদ হাফিজ উদ্দিন।

১১ জুলাই মারা যান অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম এবং ১৩ জুলাই মারা যান ডা. মো. শহীদুল ইসলাম ও অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. মোস্তফা কামাল।

কার ভুলে এত মৃত্যু?

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ তালিকায় যেমন দেশবরণ্যে বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র চিকিৎসক রয়েছেন, তেমনি মাত্র কাজ শুরু করেছেন এমন ডাক্তারও আছেন।’

করোনার শুরুর দিকে চিকিৎসকদের মৃত্যু বেশি হওয়ার কিছু কারণও ছিল মন্তব্য করে ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সঠিক পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুয়েপমেন্টে (পিপিই) নিয়ে সংকট ছিল। দ্বিতীয়ত চিকিৎসকদের রোগী দেখার প্রসিডিউরেও ভুল ছিল। অনেক ভুল আমরা করেছি। প্রথম দিকে করোনা চিকিৎসার প্রটোকল আমাদের জানা ছিল না। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। সঙ্গে রয়েছে টিকাদান। সরকার সব ফ্রন্টলাইনারদের টিকার ব্যবস্থা করেছেন। যার ফলে এখন আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম। তবে যারা জটিল ও কঠিন অন্যান্য রোগে আক্রান্ত তাদের মৃত্যু বেশি হচ্ছে।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন