খাস কামরার কেলেঙ্কারিতে ওএসডি হওয়া জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
শাস্তি হিসেবে বেতন কমার পাশাপাশি চাকরি জীবনে তিনি আর পদোন্নতি পাবেন না জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, “তদন্ত শেষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। তার বেতন অবনমন করা হয়েছে এবং তিনি চাকরি জীবনে আর পদোন্নতি পাবেন না। বর্তমান পদ থেকেই তাকে অবসরে যেতে হবে।”
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আহমেদ কবীরের কাছে চিঠি পৌঁছানো মাত্র সে সময় থেকে বেতন কমানোর বিষয়টি কার্যকর হবে বলে জানান শেখ ইউসুফ হারুন।
প্রজ্ঞাপনে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮-এর বিধি ৪(৩)(ক) মোতাবেক গুরুদণ্ড হিসাবে তিন বছরের জন্য নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’ করার কথা বলা হয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, শাস্তি হিসেবে এখন থেকে আহমেদ কবীর ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী ষষ্ঠ গ্রেডের সর্বনিম্ন ধাপের বেতন পাবেন। আহমেদ কবীর উপসচিব হিসেবে বর্তমানে পঞ্চম গ্রেডে বেতন পান।
পঞ্চম গ্রেডে তার মূল বেতন প্রায় ৭০ হাজার টাকা। এখন তিনি মূল বেতন পাবেন ৩৫ হাজার টাকা। সঙ্গে অন্যান্য ভাতা ও সুবিধাও পাবেন।
২০১৯ সালের অগাস্টে দুটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন পুরুষ ও একজন নারীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। বলা হয়, ওই ভিডিও জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের অফিসের বিশ্রাম কক্ষ বা খাস কামরার। পুরুষটি জেলা প্রশাসক নিজে এবং অন্যজন তার দপ্তরের একজন অফিস সহকারী।
ওই ভিডিও ভাইরাল হলে তুমুল আলোচনার মধ্যে ২৫ আগস্ট জেলা প্রশাসকের পদ থেকে আহমেদ কবীরকে সরিয়ে ওএসডি করা হয়। সেই সঙ্গে অভিযোগ তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত ওই তদন্ত কমিটি জামালপুর ঘুরে এসে ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন দেয়।
সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আহমেদ কবীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।