সারাবিশ্বডটকম নিউজ ডেস্ক: রাজা চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে শেখ হাসিনাসহ সাত জনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। শেখ হাসিনার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই নেতার সম্পর্কের উষ্ণতা প্রকাশ পেয়েছে। একদিকে শেখ হাসিনা এশীয় ঐতিহ্যের মানুষ তরুণ ঋষি সুনাকের প্রশংসা করেছেন। অপরদিকে ঋষি সুনাক বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার ও তার পরিবারের জন্য অনুপ্রেরণা।
দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকের পরে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি ও তার পত্নী সুজানা স্পার্কস এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার জন্য তার হোটেলে যান। যুক্তরাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের এই উষ্ণ অভ্যর্থনাকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার মো. শহীদুল হক বলেন, ‘কূটনীতিতে নেতৃত্বের মধ্যে আন্তরিকতা অত্যন্ত বড় ভূমিকা পালন করে। অনেক কঠিন সমস্যাও সমাধান হয়ে যায়, যদি নেতাদের মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে তৈরি হয়।’
৩৫ মিনিটের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক অনেক সময় জানিয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘এই বৈঠকটি অত্যন্ত ভালো হয়েছে। অন্যথায় এই বৈঠক এত লম্বা হতো না। এখানে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।’
একই ধরনের মনোভাব প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. আবদুল হান্নান বলেন, ‘এটি অত্যন্ত জোরালো ইতিবাচক বার্তা। বাংলাদেশের সাফল্যের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ছে– এটি তার প্রমাণ।’
বৈঠকটির গুরুত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে সফল উত্তরণ হচ্ছে বাংলাদেশের এবং মধ্যম আয়ের দেশের পথে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে– এই বৈঠক তার স্বীকৃতি এবং তাদের অধিকতর আগ্রহ ও বাংলাদেশের সঙ্গে কার্যকর অংশীদারিত্ব তৈরিতে সুস্পষ্ট আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ।’
১৩০টি দেশের মধ্যে সাতটি দেশের নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঋষি সুনাক এবং এটি থেকে বোঝা যায় তাদের আগ্রহের মাত্রা বলে তিনি জানান।
সম্পর্কোন্নয়ন
শীর্ষ নেতৃত্বের উষ্ণ সম্পর্ক দুই দেশের সম্পর্ককে ভিন্ন স্তরে নিয়ে যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে মো. শহীদুল হক বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক। ১৯৭১ সালেও তারা অত্যন্ত গঠনমূলক ভূমিকা রেখেছে। বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাতেও তারা আমাদের সহায়তা করে।’
দুই প্রধানমন্ত্রীর আলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কৌশলগত স্তরে নেওয়া সম্ভব হতে পারে।’
রাষ্ট্রদূত হান্নান মনে করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক বহুমাত্রিকতা এবং উন্নততর পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে।
তিনি মনে করেন যে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে অত্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সম্পর্ক উন্নয়নের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।’