অধ্যাপক শাহেদ আলী এর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন

ছবি: সংগৃহিত।

সারাবিশ্বডটকম নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার কৃতী সন্তান অধ্যাপক শাহেদ আলী ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মে বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবী। তিনি ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের একজন ভাষাসৈনিক। ইসলামী চিন্তাবিদ, সাংবাদিক, অনুবাদক, গবেষক হিসাবেও পরিচিত।
শাহেদ আলী সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি সিলেট এমসি কলেজ থেকে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ব্যাচেলার ডিগ্রি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

শাহেদ আলী ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত মিরপুর বাংলা কলেজ, রংপুর কারমাইকেল কলেজ ও চট্টগ্রাম সিটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে খেলাফতে রব্বানী পার্টির নমিনেশনে সুনামগঞ্জ থেকে আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। অধ্যাপক শাহেদ আলী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (সাবেক ইসলামিক একাডেমী) প্রতিষ্ঠাতা সচিব ছিলেন। এরপর ১৯৬২ থেকে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সঙ্কলন বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। চল্লিশের দশক থেকেই শাহেদ আলী সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৪-৪৬ খ্রিস্টাব্দে মাসিক প্রভাতি এবং ১৯৪৮-৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকাদ্বয় সম্পাদনা করেন। ১৯৫৫ সালে দৈনিক বুনিয়াদ সম্পাদনা করেন। ইসলামী ফাউন্ডেশনের বিখ্যাত শিশু মাসিক সবুজ পাতার সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন ১৯৬৩ থেকে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে দৈনিক মিল্লাতের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৩-৬৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলা একাডেমি পত্রিকার সম্পাদনা বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ইসলামী বিশ্বকোষের সম্পাদনা বোর্ডেরও সদস্য ছিলেন। অধ্যাপক শাহেদ আলী বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৪৮-৫২-এর ভাষা আন্দোলনের সার্বিক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। তিনি তমুদ্দন মজলিসের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে সওগাত পত্রিকায় শাহেদ আলীর প্রথম গল্প “অশ্রু” প্রকাশিত হয়।
তাঁর সেরা গল্পগ্রন্থ ” জিবরাঈলের ডানা ” এছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ক্রমান্বয়ে একের পর এক গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে থাকে। শাহেদ আলী ছিলেন একজন জীবনধর্মী লেখক ও কথাসাহিত্যিক।

বিরল প্রতিভার অধিকারী অধ্যাপক শাহেদ আলী ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ৬ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।